thought

what is Cognitive Behavioral Therapy cbt

CBT (Cognitive Behavioral Therapy)

CBT কী?

CBT বা Cognitive Behavioral Therapy হল একটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা ব্যক্তি কীভাবে চিন্তা করে, কীভাবে অনুভব করে এবং কীভাবে আচরণ করে—এই তিনটির পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে কাজ করে। CBT-র মূল ধারণা হল, আমাদের চিন্তাভাবনা (Cognition), আবেগ (Emotion), এবং আচরণ (Behavior) একে অপরের ওপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। Aaron T. Beck ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকে Cognitive Therapy (পরবর্তীতে যেটি Cognitive Behavioral Therapy বা CBT হিসেবে পরিচিত হয়) উদ্ভাবন করেন খন কোনো ব্যক্তি নেতিবাচক চিন্তায় ডুবে যায়, তখন তার আবেগ খারাপ হয় এবং সে অনেকসময় অস্বাস্থ্যকর আচরণ করতে থাকে। CBT এই নেতিবাচক চিন্তার ধরনগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে ইতিবাচক ও বাস্তবধর্মী চিন্তায় রূপান্তরের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটায়।

CBT ট্রেনিং কারা কারা করতে পারবে?

CBT সাধারণত নিম্নোক্ত পেশাজীবীরা প্রয়োগ করে থাকেন:

  • মনোবিজ্ঞানী (Psychologist)
  • সাইকোথেরাপিস্ট (Psychotherapist)
  • মনোরোগ চিকিৎসক (Psychiatrist)
  • কাউন্সেলর/থেরাপিস্ট (Mental Health Counselor/ Therapist)

তবে ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য CBT-র কিছু মৌলিক কৌশল আত্ম-চর্চার মাধ্যমে প্রয়োগ করা যায়, সেক্ষেত্রে অনেকেই এটির কিছুর কৌশল রপ্ত করতে পারেন, কিন্তু জটিল বা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশিক্ষিত থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে CBT নিতে হবে।

CBT কোন কোন মানসিক সমস্যায় ব্যবহার হয়?

CBT বিভিন্ন ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও আচরণগত সমস্যায় ব্যবহৃত হয় যেমন:

১. উদ্বেগ ও ভীতি (Anxiety Disorders):

  • জেনারালাইজড অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার (GAD)
  • সোশ্যাল ফোবিয়া
  • প্যানিক অ্যাটাক
  • ফোবিয়া (উচ্চতা, পানি, অন্ধকার ইত্যাদি)

২. বিষণ্নতা (Depression):

  • দীর্ঘস্থায়ী মন খারাপ
  • আত্মসম্মানহীনতা
  • আত্মঘৃণা ও আত্মহত্যার চিন্তা

৩. আবেগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা (Emotional Dysregulation):

  • মেজাজ পরিবর্তন
  • রাগ বা হিংস্র আচরণ
  • হতাশা ও অবসাদ

৪. ট্রমা ও PTSD (Post-Traumatic Stress Disorder):

  • দুর্ঘটনা, সহিংসতা, বা নিপীড়নের পর মানসিক সংকট
  • দুঃস্বপ্ন, পুনঃস্মরণ, এবং অস্থিরতা

৫. Obsessive-Compulsive Disorder (OCD):

  • বারবার চিন্তা (Obsessions)
  • বারবার কাজ করা (Compulsions)

৬. খাওয়া ও শরীর নিয়ে সমস্যা (Eating & Body Image Disorders):

  • আনোরেক্সিয়া
  • বুলিমিয়া
  • শরীর নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা

৭. শিশু-কিশোরদের সমস্যা:

  • স্কুল ফোবিয়া
  • পরীক্ষা ভীতি
  • আচরণগত সমস্যা

৮. অন্যান্য ক্ষেত্র:

  • দাম্পত্য বা সম্পর্ক সমস্যা
  • ঘুমের সমস্যা
  • আত্মবিশ্বাসের অভাব
  • আত্মনিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা
  • নেশা থেকে মুক্তি

 

CBT কীভাবে কাজ করে?

CBT একটি স্ট্রাকচার্ড থেরাপি, যা সাধারণত সেশনভিত্তিক হয় (সাধারণত ৬–২০ সেশন)। যা ক্লায়েন্ট ও তার সমস্যা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়ে থাকেসিবিটি কিছু নির্দিষ্ট ধাপ ও কৌশলের মাধ্যমে কাজ করে:

ধাপসমূহঃ

  1. Assessment (মূল্যায়ন): সমস্যার ধরণ ও গভীরতা বোঝা হয়।
  2. Goal Setting: থেরাপির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
  3. Psychoeducation: রোগীকে বোঝানো হয় যে CBT কীভাবে কাজ করে।
  4. Cognitive Restructuring: নেতিবাচক চিন্তা চিহ্নিত করে সেগুলোর বাস্তবতা যাচাই ও ইতিবাচক চিন্তায় রূপান্তর।
  5. Behavioral Activation: দৈনন্দিন কাজে অংশগ্রহণ বাড়ানো হয় যাতে ব্যক্তি সক্রিয় হয় এবং বিষণ্নতা কমে।
  6. Exposure Therapy: ভয় বা এড়িয়ে চলা আচরণ ধাপে ধাপে মোকাবিলা করার জন্য প্রশিক্ষণ।
  7. Skills Training: সমস্যা সমাধান, আত্মনিয়ন্ত্রণ, ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কৌশল শেখানো।
  8. Relapse Prevention: ভবিষ্যতে সমস্যা ফিরে আসা ঠেকানোর উপায় শেখানো।

 

CBT-এর গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগুলোঃ

  • ABC Model (Activating event – Belief – Consequence)
  • Thought Record/Thought Diary
  • Socratic Questioning
  • Cognitive Distortions চিহ্নিত করা (যেমন: overgeneralization, catastrophizing)
  • Graded Exposure
  • Behavioral Experiments
  • Activity Scheduling
  • Relaxation Techniques (e.g., deep breathing, progressive muscle relaxation)
  • Mindfulness etc

 

CBT-এর সুবিধাসমূহ:

  • সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে কার্যকর ফল পাওয়া যায়
  • বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ও গবেষণাভিত্তিক পদ্ধতি
  • আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে তোলে
  • ভবিষ্যতে নিজে নিজে সমস্যা মোকাবেলায় সহায়ক

 

CBT কাদের জন্য নয়?

CBT সকলের জন্য কার্যকর নয় যদি:

  • ব্যক্তি থেরাপির নিয়ম মেনে না চলেন
  • চিন্তা বা আবেগ প্রকাশে অক্ষম হন
  • সময়জ্ঞান, পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে অবগত না থাকলে
  • গুরুতর মানসিক সমস্যা (যেমন: সিজোফ্রেনিয়া বা মানসিক বিভ্রান্তি) থাকলে এককভাবে CBT যথেষ্ট না হতে পারে, তখন ওষুধ এবং অন্যান্য থেরাপির দরকার হতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, CBT হলো একটি আধুনিক, কার্যকর এবং বহুল ব্যবহৃত একটি থেরাপি বা পদ্ধতি, যা ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণের মধ্যে সম্পর্ককে বোঝার মাধ্যমে তাকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবেলায় সহায়তা করে।

মনোরোগ চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত Cognitive Behavior Therapy (CBT) শিখুন এখন বাংলায়! বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক সাইকোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (BIFPS) আয়োজিত এই বিশেষ কোর্সে আমরা শুধুমাত্র CBT-র মাধ্যমে বিভিন্ন ডিসঅর্ডারের ফর্মুলেশন ও ট্রিটমেন্ট শেখাই। ভারতের প্রখ্যাত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ড. প্রশান্ত কুমার রায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিজন বড়ুই এবং ফরেনসিক সাইকোলজিস্ট মো: মিরাজ হোসেন সরাসরি বাংলায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ডিপ্রেশন, এংজাইটি, OCD, PTSD সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যার CBT ভিত্তিক চিকিৎসায় এই কোর্সটি অত্যন্ত কার্যকরী। এখনই রেজিস্ট্রেশন করে নিন বিশেষ ৫০% ডিসকাউন্টে - মাত্র ৫,০০০ টাকায় পাচ্ছেন ১৬টি ভিডিও ক্লাস, সমস্যা সমাধান ক্লাস, হার্ডকপি সার্টিফিকেট ও এক্সপার্ট সাপোর্ট! বিস্তারিত জানতে কল করুন: +৮৮০১৯৮৮-৮৯৬৬৫৬

whatsapp