বাংলাদেশে ফরেনসিক সেবা ও শিক্ষার উন্নয়নে প্রস্তাবনা

বাংলাদেশের জনগণকে নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচার প্রদান এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক সাইকোলজি এন্ড সাইন্সেস-এর পক্ষ থেকে  ১৫ টি  প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরা হলো:

১. ন্যাশনাল ফরেনসিক সাইন্সেস ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা

• একটি কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরি স্থাপন।
• প্রতিটি বিভাগীয় শহরে এর শাখা সম্প্রসারণ।

২. ফরেনসিক সাইন্স শিক্ষার প্রসার

• বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ফরেনসিক সাইন্সের এপ্লাইড বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা।
• একটি বিশেষায়িত ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, যেখানে শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি কেস সমাধানের সুযোগ থাকবে।

৩. সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

• একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রদান ও ক্রস ভেরিফিকেশনের অনুমতি দেওয়া।
• একটি শক্তিশালী মনিটরিং বোর্ড গঠন।

৪. ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেম

• পুলিশের শরীর এবং যানবাহনে ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেম চালু করা।
• ক্রাইম সিন এবং তদন্ত কার্যক্রমের সকল কথোপকথন রেকর্ড করে সংরক্ষণ।

৫. ফরেনসিক টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে প্রেরণ

• মাঝারি ও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ফরেনসিক টিমকে দ্রুত উপস্থিত হওয়া বাধ্যতামূলক করা।
• এ বিষয়ে নতুন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন।

৬. সমন্বিত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা

• পুলিশ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার এবং বিচারকদের জন্য যৌথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।

৭. ফরেনসিক মেডিসিন ও ওসিসি (One Stop Crisis Center)

• জনবল বৃদ্ধি এবং কার্যক্রম আরও সহজ ও দ্রুততর করা।

৮. সিসিটিভি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ

• শহরগুলোতে সিসিটিভি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ।
• অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে Digital Forensic রিপোর্ট সরবরাহ করা।

৯. বিচারিক কার্যক্রম রেকর্ডিং

• আদালতের বিচারিক কার্যক্রম ভিডিও আকারে সংরক্ষণ এবং প্রয়োজনে প্রকাশ।

১০. অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে বাজেট বরাদ্দ

• ফরেনসিক কার্যক্রমের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ।

১১. আধুনিক ল্যাবরেটরি সরঞ্জাম

• প্রতিটি ল্যাব আধুনিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জামে সজ্জিত করা।
• ল্যাব পরিচালনার জন্য দক্ষ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ।
• ল্যাবের জন্য দ্রুত তহবিল বরাদ্দ এবং এটি National Importance হিসেবে বিবেচনা।

১২. বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তির ব্যবহার

• বিদেশি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে দেশের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষক তৈরি।
• বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দেশে এনে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।
• তদন্ত ও রিপোর্ট প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে AI & Machine Learning প্রযুক্তির ব্যবহার।

১৩. জাতীয় অপরাধ ডাটাবেস গঠন

• অপরাধীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ।

১৪. অপরাধ সচেতনতা কর্মসূচি

• স্কুল-কলেজ পর্যায়ে ফরেনসিক বিজ্ঞান ও অপরাধ সচেতনতা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন।

১৫. দীর্ঘমেয়াদী মাস্টার প্ল্যান

• আগামী ৬ মাস থেকে ৩ বছরের মধ্যে ফরেনসিক সেবায় আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা।

শর্ট-টার্ম পরিকল্পনা

1. ডিজিটাল ও সাইবার ফরেনসিক টিম গঠন:
• সিএসই, আইটি, এবং সাইবার সিকিউরিটি শিক্ষার্থীদের ৩ মাসের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ।
• প্রতিটি জেলায় ডিজিটাল ফরেনসিক টিম গঠন।
2. ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ তৈরি:
• মাইক্রোবায়োলজি, বায়োলজি, এমবিবিএস, বিডিএস, প্যারামেডিকেল, রসায়ন, সাইকোলজি ইত্যাদি বিষয়ে মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ।
• প্রতিযোগিতামূলক স্যালারি দিয়ে তাদের কাজে যুক্ত করা।

লং-টার্ম পরিকল্পনা

1. আন্তর্জাতিক মানের ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা:
• বিদেশি শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা।
• প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা প্রশিক্ষক নিয়োগ।
2. বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা অর্জন:
• নিম্নোক্ত ফরেনসিক শাখাগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ তৈরি:

• Forensic Science
• Forensic Medicine
• Forensic Dental
• Forensic Toxicology
• Forensic Psychology
• Forensic Anthropology
• Forensic Biology
• Forensic Chemistry
• Forensic Physics
• Forensic Documentation
• Cyber Forensics
• Digital Forensics
• Forensic Accounting
• Forensic Nursing
• Forensic Entomology
• Forensic Botany
• Forensic Zoology
• Forensic Geology
• Forensic Engineering
• Forensic Architecture